যেকোনো ধরনের বাধা অতিক্রম করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি এবং সাহস বাংলাদেশের মানুষের আছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে নিজের বক্তব্যে চলমান হরতাল-অবরোধে দেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা চলছে উল্লেখ করে এ কথা বলেন তিনি।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু ফেলোশিপ, জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ এবং গবেষকদের মধ্যে বিশেষ অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বর্তমানে কিছু সমস্যা আমাদের আছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি, ছেলেমেয়েরা পরীক্ষা দিতে পারছে না। একটি জোট বা দল হরতাল-অবরোধের নামে তা বাধাগ্রস্ত করছে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ যেকোনো বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি রাখে এবং সে সাহসও বাঙালির আছে।’
মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের মতো যেকোনো প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করা সম্ভব জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে সাহস নিয়ে, যে উদ্দীপনা নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ডাকে ১৯৭১ সালে অস্ত্র তুলে নিয়ে এ দেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধ করেছিল; মুক্তিযুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছিল। আমি বিশ্বাস করি যে আমাদের দেশের মানুষ যেকোনো প্রতিবন্ধকতা দূর করে, মোকাবিলা করে আমাদের দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ করবে এবং আমরা এগিয়ে যাব।’
প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে একটি স্বার্থান্বেষী মহলের সমালোচনায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘এমনকি বাংলাদেশ যখন টেস্ট ম্যাচে কোয়ালিফাই করেছিল তখনো তারা আমাদের সমালোচনা করেছেন।’মেলবোর্ন ক্রিকেট কাউন্সিল (এনসিসি) মাঠে বাংলাদেশের সঙ্গে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলায় ভারতের তৃতীয় উইকেটের পতনের খবর আসার সঙ্গে দর্শকদের মুহূর্মুহ করতালির মাঝে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ ক্রিকেট দল জায়েন্ট ইংল্যান্ডকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখছে। আমরা একদিন অবশ্যই বিশ্বকাপ জিতবো।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। এ জাতির অগ্রগতি কেউই ঠেকিয়ে রাখতে সক্ষম হবে না।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে স্নাতকোত্তর অধ্যায়নের জন্য দেশ ও বিদেশের ২২২ জনকে ২০১০’র জুলাই থেকে ২০১৬’র ডিসেম্বর পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু ফেলোশীপ এবং ২০১৪-২০১৫ সালের জন্য ১ হাজার ৩৪৩ শিক্ষার্থী ও গবেষককে এনএসটি ফেলোশীপ দেয়া হয়।’
এ ছাড়া প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও গবেষণা ও উন্নয়ন প্রকল্পের ক্যাটাগরিতে ৭৩ শিক্ষার্থী, বিজ্ঞান সংশ্লিষ্ট ৬২ সংস্থা এবং ৩৫টি বেসরকারি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়কে অনুদান দেয়া হয়। এর সঙ্গে বৈজ্ঞানিক গবেষণায় উৎসাহ দিতে ৩৩০ বিজ্ঞানী ও গবেষককে বিশেষ অনুদান দেয়া হয়।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমানের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয়টির জাতীয় সংসদের স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ড. রুহুল হক ও সচিব খন্দকার আসাদুজ্জামান অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
বিজ্ঞান সংশ্লিষ্ট শিক্ষা এবং বিজ্ঞান ও জ্ঞান চর্চার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিজ্ঞান সব কিছুর সঙ্গে সম্পর্কিত। বিজ্ঞানকে অবহেলা করে কেউই এগিয়ে যেতে পারে না। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নয়ন ছাড়া একটি দেশ এগিয়ে যেতে পারে না।’
ফেলোশীপ ও অনুদানপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে তিনি সর্বোচ্চ নিষ্ঠা ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে তাদের গবেষণা পরিচালনার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের দরিদ্র জনগণের ট্যাক্সের টাকায় ফেলোশীপ ও অনুদান দেয়া হচ্ছে- এ কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আশা করি আপনারা জনগণের এই টাকার সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করবেন।’
তিনি বলেন, ‘এ সকল কর্মসূচির মধ্যে পারমাণবিক কর্মসূচি হালনাগাদ করা হয়, শিল্প গবেষণা জোরদার করা হয় এবং কৃষি গবেষণায় গুরুত্ব দেয়ার অংশ হিসেবে সবুজ বিপ্লব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা কেন্দ্র এবং ধান, পাট ও মৎস্য গবেষণার জন্য কৃষি গবেষণা কাউন্সিল প্রতিষ্ঠাসহ পৃথক ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাঁর সরকার বৈজ্ঞানিক জ্ঞান ও মানসিকতা ভিত্তিক একটি জাতি গঠন করতে চায়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ লক্ষ্যে সরকার প্রতিযোগিতাপূর্ণ এবং জ্ঞানভিত্তিক বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও গবেষণা চালাতে বিজ্ঞান ও আইসিটিতে ৮৬ কোটি টাকার বঙ্গবন্ধু ফেলোশিপ চালু করেছে। পাশাপাশি এম-ফিল, পিএইচডি এবং পোস্ট ডক্টোরাল স্টাডিজের জন্য প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান মন্ত্রণালয় থেকে ফেলোশিপ প্রদান করা হচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাঁর সরকার ২০০৯-২০১০ থেকে ২০১৩-২০১৪ সাল পর্যন্ত ৩ হাজার ৪৩৪ জন ছাত্রকে ২৩ দশমিক ৩০ কোটি টাকা দিয়েছে। পাশাপাশি ১ হাজার ১১৫টি গবেষণা প্রকল্পের জ্য ৪৯ দশমিক ৩০ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে। সরকার চলতি অর্থবছরে গবেষণার জন্য ১২ দশমিক ৪০ কোটি টাকা দিয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাঁর সরকার স্কুল পর্যায়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কারিকুলামে বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট বিষয় চালু করা হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার বৈজ্ঞানিক গবেষণায় সহায়তা দেয়ার সুফল ইতোমধ্যেই পেয়েছে। পাটের বংশগতি আবিষ্কারের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ পাট সেক্টরের জন্য এক নতুন সুযোগের সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশী ইঞ্জিনিয়াররা সফটওয়্যার আবিষ্কার করে বিদেশ থেকে প্রশংসা কুড়িয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বৈজ্ঞানিক গবেষণায় সরকারি সহায়তা খাদ্য উৎপাদনে স্বাবলম্বিতা অর্জনে এবং ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট-এর ওপর গবেষণায়, খরা সহিষ্ণু ধান আবিষ্কারের ও পরিবেশ বান্ধব সার উৎপাদনে সফলতা অর্জন করেছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশের সীমিত সম্পদের কথা বিবেচনা করে আমরা অর্থনৈতিক এবং টেকসই ব্যবহারের পাশাপাশি সম্পদের যথাযথ ব্যবস্থাপনার ব্যবস্থা করেছি।’

সরকারি চাকরিতে কোটা ইস্যুতে হাইকোর্ট থেকে সমাধান আসা উচিত: প্রধানমন্ত্রী
আইএমএফ ঋণের তৃতীয় কিস্তি পেল বাংলাদেশ
ভেঙে দেওয়া হচ্ছে সাদিক অ্যাগ্রো ফার্ম
গণতন্ত্র আছে বলেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পথচলা
আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী
সবুজ বাংলাদেশ গড়ে তুলুন : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
কোরবানির সুস্থ পশু চেনার উপায়, অসুস্থ গরু থেকে সাবধান
এইডসের গুজবে বিব্রত মমতাজ
জুনেই ঢাকায় আসতে পারেন নরেন্দ্র মোদি